ফেক্সো ১২০ একটি অ্যান্টি-অ্যালার্জি ওষুধ যা সাধারণত অ্যালার্জি বা হাইপারসেনসিটিভিটির কারণে হওয়া সমস্যাগুলোর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এর মূল উপাদান হলো ফেক্সোফেনাডিন হাইড্রোক্লোরাইড। এটি সাধারণত শরীরে অ্যালার্জির লক্ষণগুলো যেমন চুলকানি, সর্দি, চোখ দিয়ে পানি পড়া, এবং ত্বকের র্যাশ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফেক্সো ১২০ মূলত একটি নন-ড্রাউজি অ্যান্টি-হিস্টামিন, যা অ্যালার্জি থেকে দ্রুত আরাম দেয়।
ফেক্সো ১২০ কাদের জন্য কার্যকর?
এই ওষুধটি মূলত নিম্নলিখিত অবস্থায় ব্যবহার করা হয়:
- সিজনাল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস: ঋতু পরিবর্তনের ফলে যাদের নাক দিয়ে পানি পড়ে বা সর্দি হয়।
- চিকিৎসা-প্রতিরোধে চুলকানি ও ত্বকের র্যাশ: বিভিন্ন কারণজনিত ত্বকের র্যাশ কমাতে কার্যকর।
- ক্রনিক অরটিকেরিয়া: দীর্ঘমেয়াদী চুলকানি ও ফোলা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।
ফেক্সো ১২০ এর কার্যকারিতা
ফেক্সোফেনাডিন শরীরের হিস্টামিন নামক রাসায়নিককে ব্লক করে।
কীভাবে এটি কাজ করে:
- হিস্টামিন হলো এক ধরনের রাসায়নিক যা শরীরে অ্যালার্জি এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে।
- ফেক্সো ১২০ এই রাসায়নিকের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
- ফলে চুলকানি, ফোলাভাব, এবং র্যাশ দ্রুত কমে।
ফেক্সো ১২০ এর উপকারিতা
এই ওষুধটি ব্যবহার করলে নিম্নলিখিত উপকারিতা পাওয়া যায়:
- ত্বকের অ্যালার্জি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনে।
- নাক দিয়ে পানি পড়া বা সর্দি কমায়।
- দীর্ঘমেয়াদী চুলকানি বা ত্বকের প্রদাহ প্রতিরোধ করে।
- ঘুমের প্রভাব ফেলে না, তাই দিনে কাজ করতে অসুবিধা হয় না।
- খুব দ্রুত কাজ শুরু করে (সাধারণত ১ ঘণ্টার মধ্যে)।
ফেক্সো ১২০ ব্যবহারের নিয়ম
ফেক্সো ১২০ ব্যবহারের সময় কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি:
- ডোজ: সাধারণত দিনে একবার ১২০ মিলিগ্রামের একটি ট্যাবলেট খেতে হয়।
- খাওয়ার সময়: খাবারের পর ওষুধটি খাওয়া ভালো।
- পানি: বেশি পরিমাণ পানি পান করা উচিত, যাতে শরীর ভালোভাবে ওষুধ শোষণ করতে পারে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ: অবশ্যই চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলুন।
ফেক্সো ১২০ ব্যবহারের সতর্কতা
এই ওষুধটি ব্যবহারের আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত:
- প্রেগন্যান্সি ও স্তন্যদান: গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- ড্রাইভিং বা যন্ত্র চালনা: যদিও এটি নন-ড্রাউজি, তবে সতর্ক থাকতে হবে।
- অতিরিক্ত ডোজ: নির্ধারিত ডোজের বেশি কখনও খাওয়া উচিত নয়।
- অন্য ওষুধ: যদি আপনি অন্য কোনও ওষুধ খান, তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
ফেক্সো ১২০ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যদিও এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিরাপদ, তবুও কিছু ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে:
- মাথা ঘোরা বা মাথাব্যথা।
- ক্লান্তি বা দুর্বলতা।
- পেটের গ্যাস বা হালকা বদহজম।
- ত্বকে লালভাব বা চুলকানি।
গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
ফেক্সো ১২০ এর সাথে সম্পর্কিত প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
১. ফেক্সো ১২০ কখন খেতে হয়?
ফেক্সো ১২০ সাধারণত দিনে একবার খাবারের পর খেতে হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।
২. ফেক্সো ১২০ কী সবার জন্য নিরাপদ?
এই ওষুধটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক ও ১২ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের জন্য নিরাপদ। তবে কোনও দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৩. ফেক্সো ১২০ খাওয়ার পর কী ঘুম আসতে পারে?
না, এটি একটি নন-ড্রাউজি অ্যান্টি-হিস্টামিন, যা ঘুমের প্রভাব ফেলে না।
৪. ফেক্সো ১২০ কতদিন পর্যন্ত খাওয়া যেতে পারে?
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারিত সময় পর্যন্ত খাওয়া উচিত। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য।
৫. ফেক্সো ১২০ কি বাজারে সহজলভ্য?
হ্যাঁ, এটি অধিকাংশ ফার্মেসিতে সহজেই পাওয়া যায়। তবে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে কেনা ভালো।
Leave a Reply